
আপডেটঃ ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ | আগস্ট ১৩, ২০২৫
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক বিমান ও স্থল হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও অন্তত ৭৩ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সর্বশেষ তথ্যে জানানো হয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত ২৭ জন শিশু এবং ১৮ জন নারী রয়েছেন।হামলার কারণে বহু আবাসিক ভবন, বিদ্যালয়, এমনকি হাসপাতালও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ, যাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
গাজায় বসবাসরত প্রায় ২৩ লাখ মানুষের জন্য পরিস্থিতি ক্রমশই অসহনীয় হয়ে উঠছে।বিদ্যুৎ, পানি ও চিকিৎসা সেবার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। হাসপাতালগুলোতে ওষুধ ও সরঞ্জামের ঘাটতি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক মানুষ আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।উদ্ধারকর্মীরা জানাচ্ছেন, পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও নিরাপত্তা না থাকায় উদ্ধার তৎপরতা ধীর গতিতে চলছে।এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলের চাপ বাড়ছে।বিশ্বের ২৬টি দেশ যৌথভাবে এক বিবৃতিতে ইসরাইলি সামরিক অভিযান বন্ধ করে অবিলম্বে অস্ত্রবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।বিবৃতিতে বেসামরিক মানুষের ওপর হামলাকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে কানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল, নরওয়ে, আয়ারল্যান্ডসহ বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় ও লাতিন আমেরিকার রাষ্ট্র।
তবে আন্তর্জাতিক নিন্দা উপেক্ষা করে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো’ ধ্বংসের লক্ষ্যে অভিযান চালাচ্ছে।ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, গাজায় হামাস ও ইসলামিক জিহাদের সামরিক ঘাঁটি ও অস্ত্রভাণ্ডারকে লক্ষ্য করেই আক্রমণ চালানো হচ্ছে।ফিলিস্তিনি পক্ষ অভিযোগ করেছে, এসব হামলার মূল লক্ষ্য বেসামরিক মানুষকে আতঙ্কিত করে গাজাকে বসবাসের অযোগ্য করে তোলা।তাদের দাবি, অধিকাংশ হামলাই জনবসতিপূর্ণ এলাকায় চালানো হচ্ছে, যার ফলে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি প্রাণ হারাচ্ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো গাজায় অবিলম্বে মানবিক করিডোর খুলে আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।তারা সতর্ক করেছেন, পরিস্থিতি যদি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনা হয়, তবে এটি পুরো মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।বর্তমানে গাজা উপত্যকায় যে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে, তা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। সংঘাত থামানোর আহ্বান ক্রমশ জোরালো হলেও, বাস্তবে যুদ্ধবিরতির কোনো সম্ভাবনা এখনো দেখা যাচ্ছে না।
IPCS News : Dhaka :