মনোহরদীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ গণ-সমাবেশ অনুষ্ঠিত
মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি: নরসিংদীর মনোহরদীতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ- এর গণসমাবেশ।৩০ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকাল ৪.০০ টায় মনোহরদী বাসস্ট্যান্ডে মনোহরদী উপজেলা শাখার আয়োজনে ওই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গণ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন,ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, (শায়েখে চরমোনাই) সিনিয়র আমীর, মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, তিনি বলেন, যে ধর্ম-বর্ণ ভিন্নমত সবার জন্য খেলাফত এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবং ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার ও নৈরাজ্যবাদের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে মনোহরদী এক গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় তিনি আরও বলেন, গত ৫ আগস্ট এদেশের মানুষের ভাষায় দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে এদেশের মানুষের অনেক ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে। অনেক জুলুম নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। বছরের পর বছর কারারুদ্ধ, গুম-খুনের শিকার হতে হয়েছে। অনেক মা তার সন্তানকে হারিয়েছে। একমাত্র বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার একদলীয় শাসন আমলে অনেক গুলো গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও পিলখানায় ৫৭ জন সেনা হত্যা, শাপলা চত্বরে হেফাজতের নেতাকর্মী হত্যা, মিথ্যা মামলায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া সহ অনেক কোরআন প্রেমীদের পাখির মতো হত্যা করা হয়েছে।
পানি আগ্রাসনের প্রতিবাদে, তিনি বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশে তাদের সেবাদাসদের টিকিয়ে রাখতে না পেরে প্রতিশোধ পরায়ণ আচরণ হিসেবেই কোনোপ্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাঁধ খুলে দিয়েছে। যার ফলে ইতিহাসের ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বাংলাদেশের মানুষ। ভারতের এমন আত্মঘাতী কার্যক্রমের ফলে ব্যাপক প্রাণহানি, ফসল ও সম্পদের নষ্ট হচ্ছে যা আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, অবিলম্বে সীমান্তে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত সব নদীতে আন্তর্জাতিক নদী আইন অনুসরণ করতে ভারতকে বাধ্য করতে হবে। ঘোষণা ছাড়া রাতের আধারে বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশে কৃত্রিম বন্যা সংকট সৃষ্টি করে ক্ষয়ক্ষতির দায় ভারতকে নিতে হবে। এ আচরণের জন্য জবাবদিহিতা করতে হবে। অন্যথায় ভারতের আগ্রাসী আচরণের জন্য ভারতীয় সব পণ্য বয়কটসহ কঠোর জবাব দেবে দেশপ্রেমিক ছাত্র জনতা।শরীয়াহ্ বিষয়ক সম্পাদক, মুফতি লুৎফর রহমান ফরাজী বলেন,
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে অর্জিত বিজয় রক্ষা, দেশবিরোধী সকল ষড়যন্ত্র, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, সকল বৈষম্যের মোকাবেলা ও ভোটাধিকার রক্ষার্থে এবং পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের দাবি করেন।গণ সম্মেলনে মনোহরদী উপজেলা শাখার প্রচার সম্পাদক, মুফতি আশরাফ আলী যুক্তিশাহী বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রীতির দেশ, আমরা ইসলাম বিরোধী সকল কার্যক্রমের মোকাবেলা করতেছি। তিনি ইসলাম রক্ষায় ওয়ার্ড থেকে শুরু করে সর্বস্তরে ইসলামী আন্দোলনের সাথে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।গণমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, যুগ্ম মহাসচিব, মাওলানা আতাউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক, মুফতি রেজাউল করীম আবরার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, ইন্জিনিয়ার শরীফুল ইসলাম তালুকদার, আলহাজ্ব আশরাফ হোসেন ভূঁইয়া, সেক্রেটারী, মাওলানা মুসা বিন কাসিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
গণসমাবেশ শেষে বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনাসহ আহতদের সুস্থতা দানে এবং দেশে শান্তি সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাতের মাধ্যমে গণ সমাবেশ শেষ হয়।