
আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশকে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাদের তেলবাজি করতে নিষেধ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘রাজনৈতিক কোনো দলকে বিশেষ সুবিধা প্রদান বা নিজেকে রাজনৈতিক কর্মী ভাববেন না। মনে রাখবেন পেশিশক্তি কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। আপনাদের সব কাজ জনস্বার্থে এবং আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। আপনাদের আমি বলছি, আপনারা রাজনৈতিক দল থেকে দূরে থাকবেন। আমি বারবার আপনাদের বলছি, আপনারা এখন যদি তেল দেওয়া শুরু করে দেন তাহলে আপনাদের তেল কিন্তু নির্বাচনের পর শেষ হয়ে যাবে। এখন যার কাছে যে তেলটা আছে রিজার্ভ করে রাখেন। পরে কিন্তু তেলটা কাজে লাগাতে পারবেন। এজন্য আপনারা কোনো দলের দিকে যাবেন না। আপনারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার চেষ্টা করবেন।’
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনে আয়োজিত নির্বাচনি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতদিন যেমন ছিল, কিন্তু গত কয়েক দিনের ঘটনায় আমি বলব যে একটুখানি খারাপের দিকে গেছে। এটা যেন সম্পূর্ণ আগের জায়গায় যেন নিয়ে আসতে পারি সে চেষ্টা করব। জনগণ যখন নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে তখন সে সময় তাদের কেউ বাধা দিতে পারবে না। জনগণ যখন নির্বাচনের দিকে চলে যাবে তখন তাদের কেউ প্রতিহত করতে পারবে না। তারা ভোট কেন্দ্রের দিকে যেতে পারবে না।
রাজবাড়ীতে হঠাৎ করে এমন অস্থিরতা কেন হলো, নির্বাচন বানচাল জন্য আন্তর্জাতিকভাবেও কোনো কাজ করা হচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রাজবাড়ীর ঘটনা আমরা তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত প্রতিবেদনের পর আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে, তবে এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত এদের মধ্যে পাঁচজনকে ইতোমধ্যে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের পর হয়তো আমরা এই সম্পূর্ণ ঘটনা জানতে পারবো।
যাদের সামনে এবং যাদের গাফিলতির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে সেই ডিসি ও এসপিকে দায়িত্ব রেখে কি সুস্থ তদন্ত সম্ভব?—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, কাদের অবহেলায় হয়েছে সেটা তো তদন্তের পর বলতে পারব। আমি যদি আগে সবাইকে সরিয়ে দেই তাহলে তো তদন্ত গুরুত্ব দিলাম না। তদন্তের পর কেউ দোষী বা কেউ নির্দোষ প্রমাণিত হবে। কেউ যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যদি কেউ নির্দোষ হয় তাহলে তো তার অ্যাগেইনস্ট কোনো অ্যাকশন নেওয়া হবে না। এখন তদন্ত না করে আমি কীভাবে বলব যে সেই দোষী।
রাজবাড়ীতে গত কয়েকদিন আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা হুমকি দেওয়া হচ্ছিল তারপরও কেন এই মব ঠেকানো গেল না, এছাড়া গতকাল হাটহাজারীতেও এমন একটা ঘটনা ঘটলো। তাহলে কি আপনার মব ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছেন?—এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, না আমরা ব্যর্থ হচ্ছি না। যারাই এমনটা করেছে একটি বিষয় আমরা কিন্তু অনেক অসহিষ্ণু হয়ে গেছি। যারা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা অবশ্যই তাদের আইনে আওতায় নিয়ে আসবো। সবাইকে ধৈর্যশীল হওয়ার জন্য অনুরোধ করব। একটু যদি ধৈর্য না থাকে…, কোনো কিছুতে কারও কোনো ধৈর্য নাই।