আপডেটঃ ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ | অক্টোবর ১১, ২০২৫
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, হেফাজতে ইসলাম রাজনৈতিক দল না হলেও দেশের সামাজিক, ধর্মীয় ও নৈতিক দিকনির্দেশনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি মনে করেন, ধর্মভিত্তিক সংগঠন হিসেবে হেফাজতের অনেক কার্যক্রম দেশের সাধারণ মানুষের চিন্তা-চেতনা ও মূল্যবোধে প্রভাব ফেলে, যা রাজনীতিতেও পরোক্ষভাবে প্রতিফলিত হয়।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের সোনার বাংলা চাইনিজ রেস্তোরাঁয় হেফাজতে ইসলামের নতুন জেলা কমিটির পরিচিতি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এ্যানি বলেন, “হেফাজতে ইসলাম সরাসরি কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয়। কিন্তু সমাজের অভিভাবক বা পরামর্শদাতা হিসেবে তারা যে ভূমিকা রাখছেন, তা উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। ইসলামি মূল্যবোধ, সামাজিক ন্যায়বিচার ও নৈতিক দিকনির্দেশনা নিয়ে তাদের বক্তব্যগুলো সমাজে গভীর প্রভাব ফেলে। আমরা যারা রাজনীতিতে কাজ করি, তারাও সেই নির্দেশনা থেকে শিখি ও গ্রহণ করি।”তিনি বলেন, “অনেকেই প্রশ্ন করেন, হেফাজতে ইসলাম রাজনীতিতে কেন আলোচনায় আসে। বাস্তবতা হলো, এই সংগঠনের ভেতরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অনুসারী আছেন। কিন্তু তাদের মূল লক্ষ্য রাজনীতি নয়, ইসলামি সমাজব্যবস্থা ও নৈতিকতার প্রচার। সেই কারণে তাদের মতামত, বক্তব্য ও দিকনির্দেশনা সমাজে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “সম্প্রতি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য আমি মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। তিনি ইসলামের মূল বার্তা, দেশের স্বার্থ, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এবং সামাজিক মূল্যবোধ— সব কিছু বিশ্লেষণ করে পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছেন। তার কথায় যে দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছে, তাতে বোঝা যায় তিনি চান একটি মানবিক, গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ। তার বার্তায় যখন তিনি বলেছেন, ‘সবার আগে বাংলাদেশ’, তখন সেই বাক্যের মধ্যেই নিহিত আছে সমাজ, মানবতা ও স্বাধীনতার আদর্শ।”
হেফাজতের ভূমিকার প্রশংসা করে এ্যানি বলেন, “তারা যে ধর্মীয় দিকনির্দেশনা দেয়, তা শুধু মসজিদ বা মাদ্রাসার সীমাবদ্ধতায় নয়, পুরো সমাজে নৈতিক জাগরণ সৃষ্টি করে। আজকের তরুণ প্রজন্ম নৈতিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলছে; তাই হেফাজতের মতো সংগঠনের ভূমিকা এখন আরও জরুরি। ধর্মীয় চেতনা ছাড়া সমাজে স্থায়ী শান্তি বা গণতন্ত্র সম্ভব নয়।”অনুষ্ঠানে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জেলা কমিটির উপদেষ্টা আবু তাহের।
এছাড়া জেলা কমিটির সভাপতি মুফতি মুস্তাকুন্নবী কাসেমী, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ জহিরুল ইসলাম ও জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি ফারুক হোসেন নুরনবীসহ স্থানীয় নেতারা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।বক্তারা বলেন, ধর্ম ও রাজনীতির মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে হবে। ইসলামি মূল্যবোধের আলোকে ন্যায়, মানবতা ও গণতন্ত্রের ধারণা বাস্তবায়ন করলেই দেশে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
সভা শেষে অংশগ্রহণকারীরা হেফাজতের নতুন কমিটির সদস্যদের অভিনন্দন জানান এবং ভবিষ্যতে সমাজ সংস্কারে ধর্মীয় দিকনির্দেশনা আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।
IPCS News : Dhaka :