
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, সরকার টিকে আছে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সমর্থনের ভিত্তিতে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অংশীজন আছেন, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা সরকারের উচিত ছিল। অথচ সরকার এ বিষয়ে আলোচনা না করে বন্দর নিয়ে চুক্তি করেছে। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেল পাঁচটায় চট্টগ্রাম নগরে মাথাল মিছিল-পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, শেখ হাসিনা নানা কূটকৌশল, ষড়যন্ত্র, হামলা, মামলা, অত্যাচার ও খুন করে আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করেছিলেন। জুলাই-আগস্টে ছাত্ররা রাজপথে নেমে এসেছিলেন। শিক্ষার্থীদের প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কারণে বাংলার মানুষ একত্রিত হন। ছাত্ররা এই সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা রেখে সারা দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সংগঠন ও দেশের সব নাগরিক এই সময়ে রাজপথে নেমে এসেছিলেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, ফ্যাসিবাদমুক্ত রাষ্ট্র গড়তেই হয়েছিল অভ্যুত্থান।
নির্বাচন প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চাই। সে লক্ষ্য সামনে রেখেই আমরা আমাদের রাজনীতির গতিমুখ নির্ধারণ করেছিলাম। আসুন, আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নতুন গণতান্ত্রিক যাত্রা যাতে সফল হয়, তার জন্য আমরা সম্মিলিতভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করি। রাজনৈতিক অধিকার আমাদের দরকার। কেননা, রাজনৈতিক অধিকার ছাড়া আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা, আমাদের দাবি তোলার স্বাধীনতা, আমাদের প্রত্যেক মানুষের জীবনের বেঁচে থাকার স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও কর্তৃত্ববাদের মূল ভিত্তি নিহিত রয়েছে সংবিধানের ক্ষমতা কাঠামোতে। ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রধানমন্ত্রীর হাতে পৃথিবীর অন্য যেকোনো দেশের সরকারপ্রধানের চেয়েও অনেক বেশি ক্ষমতা দিয়েছে। এই ক্ষমতাবলে তারা সব প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের পকেটে ঢুকিয়ে জনগণের ওপর অত্যাচার করেছে। সে কারণে আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, কেবল শাসক বা সরকার বদলালে হবে না, শাসনব্যবস্থা এবং সংবিধানের ক্ষমতাকাঠামো বদলাতে হবে, নয়তো দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে না। শাসনব্যবস্থার মৌলিক সংস্কারের জন্য আমরা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা হাজির করেছি। এর মধ্যে রয়েছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করা। এ অনুচ্ছেদ জনপ্রতিনিধিদের হাত তোলা এমপিতে পরিণত করেছে।