
আপডেটঃ ১১:২২ পূর্বাহ্ণ | ডিসেম্বর ০৭, ২০২৫
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ব্যতিক্রমী এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। খুলনা-১ আসনে প্রথমবারের মতো একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে প্রার্থী ঘোষণা করেছে দলটি। দাকোপ ও বটিয়াঘাটা নিয়ে গঠিত এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন কৃষ্ণ নন্দী, যিনি ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতের হিন্দু কমিটির সভাপতি এবং স্থানীয়ভাবে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত।
কৃষ্ণ নন্দীর রাজনৈতিক পরিচয় ও অতীত ঘিরে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা চলছে। ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত এই প্রার্থী চুকনগর দিব্যপল্লী স্কুলে পড়াশোনা শেষে পারিবারিক মোটরসাইকেল শোরুম, তেল এবং নির্মাণসামগ্রীর ব্যবসায় যুক্ত হন। তার পরিবার অতীতে মুসলিম লীগ নেতা খান এ সবুরের অনুসারী ছিল। কৃষ্ণ নন্দীর দাবি, ২০০৩ সালে সাবেক জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ারের মাধ্যমে তিনি দলটিতে যোগ দিয়েছিলেন, তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতার সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কারণে এ মনোনয়নকে অনেকেই বিস্ময়ের চোখে দেখছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং সাধারণ মানুষের অভিযোগ—গত সরকার আমলে কৃষ্ণ নন্দী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মন্ত্রীর সঙ্গে তার একাধিক ছবি ছড়িয়ে রয়েছে, যা নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড তেমন চোখে পড়ার মতো না হলেও দেশের বাইরে একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে তার নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড হিন্দু স্ট্রাগলের প্রতিষ্ঠাতা শিপন কুমার বসুর সঙ্গেও তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উল্লেখযোগ্য আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
চুকনগর এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, স্থানীয়ভাবে রাজনৈতিক বিরোধ ও ক্ষোভের জেরে একদফা উত্তেজনা তৈরি হলে কৃষ্ণ নন্দীর বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়া হয়। তাদের দাবি, আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় তিনি ওই সময় জনরোষের মুখে পড়েন এবং এখন জামায়াতের প্রতি ঝুঁকছেন মূলত নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক আশ্রয়ের কারণে।
তবে এসব অভিযোগ সরাসরি নাকচ করেছেন কৃষ্ণ নন্দী। তার ভাষ্য, ব্যবসায়ী হিসেবে মন্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, তবে এটিকে রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা বলা ভুল। তিনি বলেন, শুধু ফুল দিয়ে সম্মান জানানো একটি পুরোনো ছবি নিয়ে অযথাই অপপ্রচার করা হচ্ছে। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, দুই দশক ধরে তিনি জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সংখ্যালঘুবান্ধব মনোভাবের কারণেই দলটির প্রতি তার আস্থা রয়েছে।
IPCS News : Dhaka :